এসময় কথা হয় কক্সবাজার শহরের পূর্ব পাহাড়তলী থেকে আসা যুবক রাকিবুল ইসলাম মুন্নার সাথে।
তিনি বলেন, ‘দেড় মাস আগে আমাকে কুকুর কামড়েছে। হাসপাতালে এসে প্রথম দুই ডোজ ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পেয়েছি। তৃতীয় ডোজ কিনে দিতে হয়েছে। এরপর চতুর্থ ডোজও কিনে দিতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে ভ্যাকসিন সরবরাহ নাই।’
তিনি বলেন, ‘বাধ্য হয়ে আমরা চার জন মিলে একটি ভ্যাকসিন ও চারটি সিরিঞ্জ কিনে এনেছি দোকান থেকে। ভ্যাকসিন ও সিরিঞ্জ মিলে ৪৯০ টাকা খরচ হয়েছে। সামর্থ্য কম বলে সরকারি হাসপাতালে আসি। এখানেও যদি ভ্যাকসিন কিনে দিতে হয় তার দুঃখজনক।’
শহরের ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা রেশমি মিত্র বলেন, ‘দেড় মাস আগে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির পোষ্য বিড়াল আমার পায়ে আঁচড় দেওয়ায় রক্তক্ষরণ হয়েছে। তারপর হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ বিনামূল্যে পেয়েছিলাম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ বাইরে থেকে কিনে এনে দিতে হয়েছে। সিরিঞ্জটা পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে দাওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন পর আমার সাড়ে তিন বছরের বাচ্চাটার হাতে আঁচড় দিয়েছে একই বিড়াল। এ পর্যন্ত তার ৩ ডোজ ভ্যাকসিনই কিনে দিতে হয়েছে। আজকে (গতকাল বৃহস্পতিবার) তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দিলাম। চারজন ভাগাভাগি করে টাকা দিয়েছি। আমার ভাগে ১২৫ টাকা পড়েছে।’
পূর্ব পাহাড়তলী গ্রামে সাড়ে চার বছর বয়সী শিশু তারেকুল ইসলামকেও ভ্যাকসিন দিতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তার পিতা। তিনি জানালেন, তারেককে বিড়াল আচড় দিয়েছে। এ পর্যন্ত দুই ডোজ ভ্যাকসিন কিনে এনে দিতে হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামুর একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি অসহায় মানুষ। নাতিকে কুকুর কামড় দেওয়ায় বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবো বলে কক্সবাজার হাসপাতালের এসেছিলাম মাত্র ২০০ টাকা গাড়ি ভাড়া নিয়ে। আসতেই খরচ হয়েছে ৬০ টাকা। এখানে এসে দেখি ভ্যাকসিন কিনে দিতে হচ্ছে। আর ১৪০ টাকা থেকে ভ্যাকসিনের জন্য ১২৫/১৩০ টাকা খরচ করলে ফিরবো কিভাবে? তাই পরে এখানে এক আত্মীয়ের ঘরে গিয়ে ১০০ টাকা টাকা ধার নিয়ে ভ্যাকসিন কিনেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোমিনুর রহমান বলেন, ‘মূলত আমাদের বহির্বিভাগে ভ্যাকসিন সেবাটি দেওয়া হয় সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। আজকেও (গতকার) পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন এসেছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভ্যাকসিনের সংকট হওয়ার কথা নয়। তারপরও বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার