বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রুতে দীর্ঘ ২৭ দির পর তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া শূন্যরেখায় গোলাগুলিতে মানুষ আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। শুক্রবার ( ১৭ ফেব্রুয়ারি) মাগরিবের পর মিয়ানমারের দু’বিদ্রোহী গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির আওয়াজে উভয় পারে বসত ঘরের গৃহিনী থেকে মুসল্লী পর্যন্ত সকলে ভয়ে তটস্থ ছিলেন। এ সময় শূন্যরেখা সংলগ্ন তুমব্রু বাজারে আসা আলী আকবর,তুমব্রু গ্রামের গৃহিনী খদিজা,তুমব্রু বাজার মসজিদের মুসল্লী আবদুজাব্বারসহ অনেকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পযর্ন্ত ৩ দিন তুমব্রুর শূন্যরেখায় গোলাগুলি ও আগুনের লেলিহান শূন্যরেখার রোহিঙ্গাসহ তুমব্রুর ৫ গ্রামের ৫ হাজার মানুষ আতংকিত ছিলো। সে সময় অনেকে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করছিলো। পরে ২১ জানুয়ারির পর গোলাগুলি বন্ধ হয়ে পড়লে তারা পূনরায় ফিরে আসে স্ব-স্ব বাড়ি ঘরে।
তারা আরও বলেন, সেই ৩ দিনে শূন্যরেখায় আশ্রিত সোয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গা শূন্যরেখায় নির্মিত অস্থায়ী তাবু ও টিনের ছাউনী ঘর পুড়ে যাওয়ার কারণে তারা বাস্তুচ্যুত হয়ে তুমব্রু গ্রামে আশ্রয় নেন। যারা এখন ট্রানজিট ক্যাম্পে ঠাঁই পেয়েছেন। সে সময় শূন্যরেখার আশ্রয় শিবিরটি পরিনত হয়েছিলো অঙ্গারে। সে রোহিঙ্গা শিবিরের পরিবর্তে এটি পোড়া জুম খোলার মতো দেখাচ্ছিল তখন। এরপর গোলাগুলি বন্ধ হওয়ার পর ২৭ দিন পর ২৮ দিনে এসে শুক্রবার ( ১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আবারো গোলাগুলির শব্দে সেই পুরোনো স্মৃতি গ্রামবাসীকে স্বরণ করিয়ে দেয়। তাদের ভয়ে তটস্থ ছিলো।
এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজকে একাধিক বার ফোন করে পাওয়া না গেলেও তার পরিষদের স্থানীয় মেম্বার শফিক আহমদ জানান, হঠাৎ গোলাগুলির শব্দে তার এলাকার মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ে। তিনি শুনেছেন এ গোলাগুলি শূন্যরেখায় হচ্ছে। আর তা-ও মিয়ানমারের দু’বিদ্রোহী স্বশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে। একটি আরকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গনাইজেশন(আরএসও) অপরটি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে পরস্পরের মুখোমুখি যুদ্ধ করে আসছে।
উল্লেখ্য, তাদের সংঘাতের জের ধরে কোনার পাড়া শূন্যরেখার সোয়া ৬ শত রোহিঙ্গা পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। এ সব কারণে মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তবে গোলাগুলির ঘটনার পর এ সীমান্তে বিজিবির সতর্ক টহল দিতে দেখা গেছেও বলেও জানান স্থানীয়রা।