এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি |
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের বটতল তিনব্রিজ পাড়ার মাঝে পাহাড় কেটে একটি ইটভাটা গড়ে তোলেন আওয়ামী লীগের ৩ নেতা। তারা হলেন আটারকছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া মেম্বার, লংগদু আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি চাঁন মিয়া, লংগদু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহামেদ মেম্বার। তারা পূর্বদেশকে জানান, ইটভাটাটি তাদের এবং এর নাম কেবিএম ব্রিকস।
গত ১৮ জানুয়ারি বিকালে লংগদু সদর থেকে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সরেজমিন দেখা যায়, মাইনী ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষা বটতল তিনব্রিজ এলাকায় পাহাড় কেটে ইটভাটাটি গড়ে তোলা হয়েছে।
আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অজয় মিত্র চাকমা বলেন, ইট ভাটাটি আটারকছড়া ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। এতে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইটভাটার চারদিকে বন থেকে আনা কাঠের জ্বালানি দেখা গেছে। এটি বৈধ কিংবা অবৈধ কি-না আমি জানি না। ইটভাটা করবেন এটি শুধু মৌখিকভাবে আমাকে জানানো হয়েছে। লিখিত কোন কাগজপত্র নেই।
স্থানীয় একাধিক জনের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। ইটভাটার একটু আগে পাহাড় ছিল। পাহাড় কেটে সমান করা হয়েছে। এ ইটভাটার প্রধান জ্বালানি স্থানীয় বনের কাঠ।
ইটভাটার অংশীদার চান মিয়া বলেন, আমরা ৩ জন এ ভাটা করেছি। তবে লোকসানে আছি। শ্রমিকরা চলে গেছে, তাই আরও লোকসান হবে। ফিল্ডের অবস্থা খুব খারাপ।
ইটভাটার আরেক অংশীদার জিয়াউর রহমান বলেন, ইটভাটাটি এ বছর করেছি। স্থানীয় কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ইট প্রয়োজন হয়। বাইরে থেকে ইট আনলে লোকসান হয়। ফিল্ডটা এত বড় নয়। এ বছর ভালভাবে করতে পারিনি। সামনের বছর হয়তো কিছু কাজ করতে পারব।
অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়াউর রহমান বলেন, আমি রাঙামাটি আসলে আপনার সাথে দেখা করবো।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এ বছর উপজেলায় ৪টি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অংকের জরিমানা করে উপজেলা প্রশাসন। তবে বটতল তিনব্রিজে ইটভাটা বিষয়ে কোন তথ্য নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা ভূমি অফিসের কমিশনার মো. মাসুদ রানা বলেন, এ ইটভাটা বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য আপাতত নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ৩দিন আগে আমি সকল ইউএনওকে চিঠি লিখেছি, যেসব উপজেলায় ইটভাটার কোন বৈধতা নেই, সেগুলোর বিষয়ে ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করতে।