মো. নুরুল করিম আরমান |
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুই এক্সরে মেশিন দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। গত বর্ষা মৌসুমের পাহাড়ি ঢলের সৃষ্ট বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে এক্সরে মেশিন দুইটি অচল হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে এক্সরে মেশিন দুটি মেরামতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় বার বার পত্র দেওয়ার পরও এক্সরে মেশিন মেরামতের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কবে নাগাদ এই অচল এক্সরে মেশিন দুটি মেরামত করে সচল করা হবে তা কেউ জানাতে পারছেন না। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের এসব পরীক্ষা করাতে না পেরে ফেরত যেতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও সঙ্গে আসা স্বজনদের।
সূত্র জানায়, ২০২২ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টিবিএল এন্ড এএসপি এর মাধ্যমে ফুজি কোম্পানির একটি ডিজিটাল এক্সরে মেশিন লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহ করেন। ২০২৩ সালের আগষ্ট মাসে অতি বর্ষনে সৃষ্ট পাহাড়ি বন্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ লামা শহর তলিয়ে যায়। এ পাহাড়ি ঢলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিবিএল’র সরবরাহকৃত এক্সরে মেশিনসহ দুইটি এক্সরে মেশিনই নিমজ্জিত হয়ে অচল হয়ে যায়। পরে এক্সরে মেশিন দুটি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট লাইন ডাইরেক্টর বরাবরে অনেকবার পত্র দেওয়া হয়। এ পত্র প্রেরণের পর টিবিএল ব্র্যাক অফিসের মাধ্যমে একটি প্রতিনিধি দল এক্সরে মেশিন মেরামতের জন্য চেষ্টা করলেও অদ্যবদি কোন সূরাহা হয়নি। দু বছর ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এক্সরে মেশিন দুইটি।
বান্দরবান জেলার অর্ধেক জনসংখ্যার বসবাস লামা উপজেলায়। পার্শ্ববর্তী আলীকদমের চৈক্ষ্যং ও চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের জনসাধারণ লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করে থাকে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনশ রোগী এখান থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এদিকে ব্র্যাকের প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানায়, নষ্ট মেশিন মেরামতের জন্য জাপান থেকে যন্ত্রাংশ আনতে হবে। কবে নাগাদ যন্ত্রাংশ আনা হবে বা এক্সরে মেশিন মেরামত করতে কতদিন সময় লাগবে, তার সুনির্দিষ্ট সময় জানাতে পারেনি ব্র্যাকের প্রতিনিধি দল।
পৌরসভা এলাকার সাবেক বিলছড়ির বাসিন্দা ধাইচিং খই (৫৬) জানান, ‘পায়ে আঘাত জনিত কারণে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হন ধাইচিং খই। ডাক্তার তাকে এক্সরে করার পরামর্শ দিয়েছেন। টাকা না থাকায় উপজেলার বাহিরে গিয়ে এক্সরে করা তার পক্ষে সম্ভব হবেনা।
এবিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এখিং মারমা বলেন, অচল এক্সরে মেশিন দুটি মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর বরাবরে অসংখ্য বার পত্র দেওয়া হয়েছে। মেরামত করবে বলে অধিদপ্তর থেকে আশ্বস্থ করা হলেও অদ্যাবদি মেরামত হয়নি। ‘আইসিডিডিআরবি পোর্টেবল এক্সরে দিয়ে সপ্তাহে একদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর রোগীদের এক্সরে করাতেন, গত একমাস আগে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান এখিং মারমা।