লামা প্রতিনিধি |
মহান বিজয় দিবসে দেশের ৩টি স্থানে কুচকাওয়াজ- ব্যান্ড বাদনে বরাবরের মতো এবারো কুচকাওয়াজে প্রথম এবং ব্যান্ড বাদনে বিশেষ সম্মাননা অর্জন করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী। ১৬ ডিসেম্বর দিনব্যাপী চট্টগ্রাম জেলা, বান্দরবান জেলা সদর ও লামা উপজেলায় পৃথক আয়োজিত অনুষ্ঠানে তারা এ সম্মাননা অর্জন করেন। বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি বোধিছড়া এলাকায় কোয়ান্টম কসমো স্কুলের অবস্থা। কোয়ান্টাম স্কুল শিক্ষার্থীর এ অর্জন লামাবাসীর সুনাম বয়ে এনেছে বলে জানান সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানী।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গানিয়ার সৈয়দ আল্ আমিন জানান, এ বছর চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আয়োজিত কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের ৩৮ জন মেয়ে শিক্ষার্থী। তারা প্যারেডে বিশেষ ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়। এছাড়াও এ স্কুলের ৬৯ জনের ছেলেদের ব্যান্ড টিম দেশাত্মবাধক বিভিন্ন গানের ব্যান্ড বাদন প্রদর্শন করে মুগ্ধ করে আগত হাজার হাজার দর্শককে। এ জন্যে তাদের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান, মেট্রপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিয়াইজি নুরে আলম মিনা ও জেলা পুলিশ সুপার এম শফিউল্লাহ।
এদিকে বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজে প্রাথমিক গ্রুপে ও ডিসপ্লেতে প্রথম হয় কোয়ামটাম কসমো স্কুল ও কলেজের জুনিয়র দল। এছাড়াও ব্যান্ড বাদনে বিশেষ পারদর্শিতা পুরস্কার অর্জন করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের ৪২ জনের ব্যান্ড টিম। এ বছর বান্দরবানে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের মোট ২১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান।
অপরদিকে লামা উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় জুনিয়র ও সিনিয়র গ্রুপ এবং ডিসপ্লেতে প্রথম হয় স্কুলটির শিক্ষার্থীরা। এখানেও তারা সকল স্কুলের কুচকাওয়াজ শেষে বিশেষ ব্যান্ড বাদন প্রদর্শন করে। এবার লামায় স্কুলটির মোট ২০২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, নির্বাহী কর্মকর্তা শান্তুনু কুমার দাশ, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহেদ উদ্দিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিল্কি রানী দাশ, থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম শেখ প্রমুখ।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তনু কুমার দাশ বলেন, মহান বিজয় দিবসে কোয়ান্টাম স্কুলের পার্ফরম্যান্স সত্যিই মনোমুগ্ধকর। চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলা সদরেও কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের অর্জন লামাবাসীর জন্য অবশ্যই সুনাম বয়ে এনেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে মাত্র সাত জন মুরং শিশু নিয়ে যাত্রা শুরু করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। ২০ বছরের পরিক্রমায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এখন এখানে আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে এই স্কুলের রয়েছে শিক্ষা ও ক্রীড়ায় দেশসেরা সাফল্য। ঢাকায় জাতীয় শিশু-কিশোর কুচকাওয়াজে তারা প্রথম হয়েছে ২০১৫ থেকে টানা পাঁচ বছর।